WB Govt Scheme : রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির মধ্যে এমন এক প্রকল্প রয়েছে যা সর্বকালের এক সেরা প্রকল্প হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। কেননা এই প্রকল্পের মাধ্যমে আপনার সামান্য পরিমাণ জমে থাকলে আপনি পেতে পারেন বছরের ১০ হাজার টাকা এবং সঙ্গে দুই লক্ষ টাকার বীমা পরিষেবাও।আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে থাকেন এবং আপনার সামান্য পরিমাণ জমি থেকে থাকে তাহলে আপনার জন্য সেটা সুযোগ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে কোন কাজ না করে শুধু আবেদন করেই এই সুযোগ সরাসরি আপনার কাছে পৌঁছে যাবে।
রাজ্য সরকার সাধারণত বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে আসেন তার মধ্যে একটি অন্যতম প্রকল্প হলো কৃষক বন্ধু প্রকল্প। এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পে বহু মানুষ সুবিধা নিচ্ছেন না তাই এখনই আবেদন করার সেরা সুযোগ আপনার জন্য। আপনি যদি এই সুযোগ নিতে পারেন তাহলে ১০০০০ টাকা অনায়াসে নিজের একাউন্টে নিতে পারেন।
সম্পর্কিত পোস্ট
40 হাজার মাসিক ইনকাম! 7টি দারুণ ব্যবসার আইডিয়া, এখনই শুরু করুন - 7 Best Business Ideaপ্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। অনেক সময় বীজ, সার, বা চাষের খরচ যোগাতে কৃষকরা অসুবিধায় পড়েন। এই সহায়তার মাধ্যমে তারা চাষের মৌসুমে প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারেন। একই সঙ্গে, যদি কোনও কৃষকের দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু হয়, তাহলে তার পরিবারও অর্থনৈতিকভাবে সুরক্ষিত থাকবে।
প্রকল্পের সারাংশ
| বিষয় | বিবরণ |
|---|---|
| প্রকল্পের নাম | কৃষক বন্ধু (Krishak Bandhu) |
| শুরু | ২০১৯ সাল |
| পরিচালন দপ্তর | কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার |
| উপকারভোগী | কৃষক ও বৈধ বর্গাদার |
| আর্থিক সহায়তা | একর প্রতি বছরে সর্বোচ্চ ₹১০,০০০ |
| ন্যূনতম সহায়তা | বছরে ₹৪,০০০ |
| বীমা সুবিধা | ₹২ লক্ষ পর্যন্ত |
| পেমেন্ট পদ্ধতি | সরাসরি ব্যাঙ্কে (DBT) |
| মরসুম | খরিফ ও রবি মরসুম |
| বরাদ্দ (২০২৫) | ₹২,৯৩০ কোটি টাকা |
কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কী কী সুবিধা পাওয়া যায়?
১. বছরে ১০ হাজার টাকার সাহায্য
যাদের নিজের নামে জমি রয়েছে, তারা প্রতি একর জমির জন্য বছরে সর্বোচ্চ ₹১০,০০০ টাকা পর্যন্ত পাবেন। এই টাকা বছরে দুই কিস্তিতে দেওয়া হয় —
- খরিফ মরসুমে (জুলাই–অগস্ট)
- রবি মরসুমে (ডিসেম্বর–জানুয়ারি)
২. কম জমিতেও টাকা
যাদের এক একরের কম জমি আছে, তারাও পিছিয়ে থাকবেন না। তাদের জন্য বছরে ₹৪,০০০ টাকা সহায়তা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩. বিনামূল্যের জীবনবীমা সুবিধা
যদি কোনো কৃষকের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে থাকে এবং তার মৃত্যু ঘটে, তাহলে তার পরিবার ₹২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমা টাকা পায়। এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়।
৪. সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা
এই প্রকল্পের টাকা কোনও দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে দেওয়া হয় না। সরকার সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (DBT) টাকা পাঠিয়ে দেয়। ফলে দুর্নীতি বা বিলম্বের সম্ভাবনা থাকে না।
২০২৫ সালের নতুন আপডেট
এই বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের খরিফ মরসুমে, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই প্রায় ₹২,৯৩০ কোটি টাকা কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছে।
প্রায় ১.০৯ কোটি কৃষক ও বর্গাদার এই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন।
২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার মোট ₹২৪,০০০ কোটির বেশি টাকা খরচ করেছে। শুধু মৃত্যুকালীন বীমা সুবিধার জন্যই খরচ হয়েছে প্রায় ₹২,৯২০ কোটি টাকা।
আবেদন করার যোগ্যতা
এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মানতে হয় —
- আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে
- আবেদনকারীকে হতে হবে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা
- আবেদনকারীকে হতে হবে —
- জমির মালিক, অথবা
- বৈধ বর্গাদার (অন্যের জমিতে চাষ করেন এমন ব্যক্তি)
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
আবেদনের সময় নিচের কাগজপত্রগুলি লাগবে —
- ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড (পরিচয় প্রমাণের জন্য)
- জমির দলিল বা Record of Rights (ROR)
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও IFSC কোড
- সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- জন্মসনদ বা বয়স প্রমাণপত্র (প্রয়োজনে)
আবেদন করার নিয়ম
বর্তমানে এই প্রকল্পে আবেদন অফলাইন পদ্ধতিতে করা যায়। ভবিষ্যতে অনলাইন আবেদনও চালু করা হবে।
অফলাইন আবেদন প্রক্রিয়া
১. আবেদনপত্র সংগ্রহ করুন:
স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিস বা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিস (BDO) থেকে ফর্ম নিতে হবে।
২. ফর্ম পূরণ করুন:
সঠিকভাবে ফর্ম পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত করতে হবে।
৩. জমা দিন:
ফর্ম ও নথি যাচাইয়ের পর অফিসে জমা দিতে হবে।
৪. টাকা পাওয়া:
আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে নির্দিষ্ট কিস্তিতে টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।
অনলাইন আবেদন (আসছে শীঘ্রই)
রাজ্য সরকার শীঘ্রই কৃষক বন্ধু প্রকল্পের জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করতে চলেছে। সেখানে কৃষকরা নিজেদের নাম রেজিস্টার করতে পারবেন, আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করতে পারবেন এবং আবেদন স্ট্যাটাসও ঘরে বসে চেক করতে পারবেন।
এই প্রকল্পের গুরুত্ব
- কৃষকদের মধ্যে আর্থিক সুরক্ষা তৈরি হয়েছে
- চাষের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের ব্যবস্থা সহজ হয়েছে
- কৃষকদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে
- দালালদের ভূমিকা কমে গেছে
- গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হচ্ছে
সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
প্রশ্ন: জমির দলিল ছাড়া কি আবেদন করা যাবে?
উত্তর: না, জমির মালিকানা বা বৈধ বর্গাদারি প্রমাণ থাকা আবশ্যক।
প্রশ্ন: বছরে কখন টাকা দেওয়া হয়?
উত্তর: বছরে দুটি কিস্তিতে — খরিফ ও রবি মরসুমে।
প্রশ্ন: অনলাইনে আবেদন করা যায় কি?
উত্তর: এখন মূলত অফলাইনে হয়, তবে খুব শীঘ্রই অনলাইন আবেদন শুরু হবে।
প্রশ্ন: ৬০ বছরের বেশি বয়সের কৃষক আবেদন করতে পারবেন?
উত্তর: না, প্রকল্পে অংশগ্রহণের বয়সসীমা ৬০ বছর পর্যন্ত।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম প্রকল্পগুলির মধ্যে হলো কৃষক বন্ধু একটি সেরা প্রকল্প। বর্তমান সময়ে স্বল্প পরিমাণ জমি নেই এমন লোকের অভাব খুবই কম রয়েছে, তাইম আপনার কৃষি জমি থাকো কিংবা প্রতিটা জমি যে কোন জমির শুধু দলিল থাকলেই আপনি পেতে পারেন 10000 টাকা পর্যন্ত সরকারি সহায়তা খুব সহজেই। যারা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে চাই এবং আবেদন করতে আগ্রহী তারা উপরোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করুন এবং এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে ফেলুন।

Sabari College is a independent news portal, we deliver content related to education for 5 years experience. Please follow us for any Educational related update. Thanks










